এসেছিলেন সিনেমার নায়ক হতে, চেয়েছিলেন সুপার হিরো সুপার হিরোইন এর চ্যাম্পিয়ন হতে অথচ এখন হয়ে গেলেন নাটকের সুপার হিরো। এখন তার নামে youtube এ শত শত নাটকের লাখ লাখ ভিউ হচ্ছে। বলতেছি এই মুহূর্তে বাংলা নাটকের অন্যতম সেরা ও জনপ্রিয় অভিনেতা নিলয় আলমগীর এর কথা।
নিলয় আলমগীর ১৯৮৪ সালের ২০ আগস্ট জন্মগ্রহণ। জন্মের পরে ঢাকা শহরেই তার বেড়ে উঠা। দেখতে সুদর্শন আর নইত্য জানা নিলয় অভিনয়টাও রপ্ত করেছেন ভালোই।
২০০৮ সালের নায়ক নায়িকার খোঁজের সন্ধানে শুরু হয়েছিল রিয়েলিটি শো সুপার হিরো সুপার হিরোইন। সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন হন নিলয় আলমগীর। একি সোয়ে অংশ নিয়েছিলেন নায়ক সাইমন, সোহান খান, মুস্তাফিজুর নূর, ইমরান ও আরো অনেকে।
নিলয় আলমগীর চ্যাম্পিয়ন হবার পর সিনেমার নায়ক হবার আশায় বুক বাঁধে। অনেকে সেই আশা দিতে লাগলেন! নানান ছবির অফারও আসে কিন্তু ছবি আর হয় না। অবশেষে নায়িকা আঁচলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন মাসুদ কায়নাতের বেইলী রোড ছবিতে। কিন্তু মুক্তি পেতে দেরি হচ্ছে ছবিটি।
https://youtu.be/M1A8W5W-5T4?si=_-PgYt-3O3DngLhs
ঠিক তখনই অফার আসে বাংলালিংকের বিজ্ঞাপনের মডেল হবার। স্বাভাবিকভাবেই লুফে নিলেন এবং সারাদেশে পরিচিতি পেলেন নিলয় আলমগীর।
একই বিজ্ঞাপনে শখ সারিকা ছাড়া ছিল আজকের আরিফিন শুভ।
সিনেমা আকাঙ্ক্ষিত প্রস্তাব না পাওয়ায় নিজেকে যুক্ত করলেন নাটকে। অপূর্ব অভিনীত ফেরদৌস হাসানের বন্ধু আমারও তোমার হৃদয় পাগল নাটকে। ধীরেসুস্থে যুক্ত হয়ে গেলেন টিভি নাটকে।
সেই সুবাদেই সালাউদ্দিন লাভলু সঙ্গে পরিচয়। অতঃপর পেলেন সাফল্যতা। লাভলুর সোনার পাখি রুপার পাখি ধারাবাহিক অভিনয় করে দারুণ আলোচিত হন নিলয়।
এই নাটকে যে ভালো অভিনয় করেছেন এটা যে কেউই স্বীকার করতে বাধ্য হবেন। এই নাটক গুলিতে অভিনয় করা ছিল নিলয় এর জন্য আশীর্বাদ।
এছাড়া প্রিয় দিন প্রিয় রাত থেকে শুরু করে লাল পিপড়া কালো পিপড়া, মেয়েটি কথা বলিবে, প্রেম করিবে না সহ অনেক নাটকে একক ভাবে অভিনয় করেছেন নিলয় আলমগীর।
বাংলালিংকের বিজ্ঞাপন করতে গিয়ে মডেল অভিনেত্রী আনিকা কোভিদ শখ এর সঙ্গে পরিচয় নিলয়ের। দুজনে একসাথে অল্প অল্প প্রেমের গল্প ছিনেমায় অভিনয় করেন। ছিনেমাটি ২০১৪ সালে মুক্তি পেয়ে মোটামুটি আলোচিত হয়েছিল।
অভিনয় করতে করতেই দুইজন জড়িয়ে পড়েন প্রেমের সম্পর্কে। ক্লোজআপ কাছে আসার গল্পে নির্মিত পেন্সিলে আঁকা ভালোবাসা নাটকেও ছিলেন তারা।
ধারাবাহিক নাটক কলেজ করেছেন জুটি বেঁধে। এছাড়াও বহু নাটকে অভিনয়ের পর একসময় দুজনে সিদ্ধান্ত নেন বিয়ের। নিজেদের ঘরোয়াভাবে বিয়ে করেন তারা।
কিন্তু তাদের সংসার জীবন সুখের হয় নি। বনিবনা না হওয়ায় ডিভোর্স হয় তাদের মধ্যে। সে সময় নিলয় অভিনয়ে অনিয়মিত হয়ে যান। আর শখ চলে যান একেবারেই আড়ালে।
করনার পর নিলয় আলমগীর আবার ব্যস্ত হয়ে ওঠেন নাটক শুটিং নিয়ে। ২০২১ সালে নিলয় তাবাসসুম বৃদিকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর যেন তার সৌভাগ্য খুলে যায়।
তার নাটক গুলো একের পর এক ইউটিউবে কোটি কোটি ভিউজ হতে থাকে। অভিনেত্রী হিমির সঙ্গে গড়ে উঠে তার জুটি। এই বছর এই জুটির ০৫টির মতো নাটক ইউটিউব সেরা ভিউজের তালিকায় এগিয়ে আছে।
এর মধ্যে দুষ্টু শশুর মিষ্টি জামাই, ঢাকাইয়া পোলা সিলেটি পুরি, সংসার আমার ভাল্লাগেনা অন্যতম।
নিলয়ের নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে।
সেখানে প্রায় প্রতিটি নাটকের মধ্যে কোটি ভিউজ রয়েছে। তার এই নাটক গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাটক হল বড় মিয়া ছোট মিয়া, পরান পাখি অন্যতম।
শুধু হিমি নয় চামিরা খান মাহীর সঙ্গে জুটি বেঁধেও অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনেতা মাছুম বাসারের সঙ্গে তারা অভিনয় এখন বেশ জমজমাট। নিলয়ের চ্যানেলের বিয়ে বাড়ির গল্প নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়েছেন সাব্বির অর্ণব।
সুযোগ পেলেই স্ত্রী তাবাসসুম বৃদিকে নিয়ে বিদেশে ঘুরতে চলে যান নিলয়। জীবনকে দারুণভাবে উপভোগ করেন তিনি।
নীলাকে নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছ। কমেডি নাটকের নামে ভাড়া মেয়ে সস্তা শ্বশুর নির্ভর কনটেন্ট নিয়ে অভিনয় করেন এমন অভিযোগ, তার সাথে তিনি নাকি অতি অভিনয় করেন এই অভিযুক্ত আছেই। এর সাথে সালাউদ্দিন লাভলু রনিদের সঙ্গেও দূরত্ব বেড়েছে। এখন তিনি নির্দিষ্ট কয়েকজন নির্মাতার সঙ্গে কাজ করেন, যারা ঘুরেফিরে একই থিমের নাটক করেন।
তবে তার নাটকের ইউটিউব ভিউজ বেশি বলে এই সবাই তাকে বেশি পছন্দ করছে। ফলে এ ধরণের নাটকই তিনি বেশি করতেছেন।