দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তাল চট্টগ্রাম ইপিজেড CEPZ

দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তাল চট্টগ্রাম ইপিজেড

চলতি বছরের শুরু থেকে প্রতিদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে আছে চট্টগ্রাম ইপিজেড। বেতন বৃদ্ধির দাবিতে এক একদিন এক এক ফ্যাক্টরির ওয়ারকার রা ইপিজেড চত্বরে আন্দোলন করে যাচ্ছে।

দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তাল চট্টগ্রাম ইপিজেড

তারি ধারাবাহিকতায় শনিবার ১৩ই জানুয়ারি এমএনসি অ্যাপারেলস লিমিটেড এর ওয়ার্কাররা আন্দোলন করতেছে। তারা গত বৃহস্পতিবার আন্দোলন করেছিল এবং আজকেও সেই একইভাবে আন্দোলন করতেছে তীব্রভাবে। যার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম ইপিজেডের সকল কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে আছে।

দপায় দপায় সকল ফ্যাক্টরির ওয়ার্কারদের আন্দোলনের মুখে যদিও সকল ফ্যাক্টরি তাদের দাবি মেনে নিয়েছে কিন্তু এমএনসি অ্যাপারেলস লিমিটেড ফ্যাক্টরি তাদের পার্কারদের দাবি না মানায় তারা এখনো আন্দোলন চলমান রেখেছে। যার ফলে এই একটি ফ্যাক্টরির কারণে সকল ফ্যাক্টরির সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে।

যাতে করে কোন নাশকতা না হতে পারে তার জন্য পুলিশ, র‍্যাব এবং আনসার বাহিনীর বিপুল সদস্য জড় হয়ে আছে। ওয়ার্কাররা একের পর এক স্লোগানে মুখরিত করে রেখেছে চট্টগ্রাম ইপিজেড।

এখনো পর্যন্ত ফ্যাক্টরির পক্ষ থেকে এখনো কোনো আদেশ আসেনি। কোন আদেশ আসা পর্যন্ত ওয়ার্কার গন গেট ছাড়বে না বলে জানিয়েছিলেন। তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

তারা সুস্থভাবে তাদের আন্দোলন করতেছে কোন প্রকার নাশকতা ছাড়ায়। সকালে আশা করতেছে যে অচিরেই এই সমস্যার সমাধান হবে এবং সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

চোখ লাল হলে যা করণীয়

images

শীত পড়তেই নানা রোগজীবাণু শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই সময় ত্বক শুষ্ক হওয়া থেকে চোখের নানা সংক্রমণও দেখা দিতে থাকে। এমন সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। চোখ লাল হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। খুব ঘন ঘন চোখ লাল হলে ও দীর্ঘ সময় লাল থাকলে অবহেলা না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

অনেক কারণে চোখ লাল হয়ে যেতে পারে। যেমন: ধুলোবালি, ঘরের স্যাঁতস্যাঁতে প্রাচীরে বাস করা অণুজীব, পোষা প্রাণীর শরীরে বসবাসকারী পরজীবী, ফুলের রেণু, সুইমিং পুলে ব্যবহার্য ক্লোরিন, সুগন্ধী, সিগারেটের ধোঁয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া ভোঁতা কিংবা ধারালো বস্তুর আঘাতে রক্তক্ষরণ হয়ে চোখ লাল হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত চিকিৎসার অভাবে আঘাতপ্রাপ্ত চোখের ক্ষতস্থানে ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাসের সংক্রমণের মাধ্যমেও চোখ লাল হয়ে যেতে পারে। নিয়মিত মাদকদ্রব্য ও অ্যালকোহল গ্রহণের ফলে চোখের ধমনীগুলো প্রসারিত হয়ে স্থায়ী লালচে ভাব তৈরি করতে পারে।

কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন ১. চোখে বিরতিহীন চুলকানি, জ্বলুনি হলে এবং অঝোরে পানি ঝরতে থাকলে। ২. চোখে লালচে ভাব ৩ দিনের বেশি স্থায়ী হলে। ৩. চোখে হলুদ,বাদামি কিংবা সবুজ রঙের আঠালো মিউকাস দেখা দিলে। ৪. চোখের অভ্যন্তরে ও চারপাশে প্রচণ্ড ব্যথা এবং চাপ অনুভূত হলে। ৫. জ্বরভাব এবং আলোর প্রতি তীব্র অস্বস্তি দেখা দিলে। ৬. নবজাতক এবং ৬ মাসের কম বয়সী শিশুর চোখে লালচে ভাবের পাশাপাশি পুঁজ দেখা দিলে।

 

করণীয় ১. চোখে সংবেদনশীলতা উদ্রেককারী বস্তু পরিহার করা। ২. ঠান্ডা পানিতে তূলো বা পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে দিনে ৩-৪ বার শেক নেওয়া। ৩. বাড়ির স্যাঁতস্যাঁতে ভাব দূর করতে হবে।  ৪. চোখ বার বার না রগড়ানো এবং হাত জীবাণুমুক্ত রাখা। ৫. শয়নকক্ষে ব্যবহারের বিছানা, চাদর ও বালিশের কাভার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। ৬. চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন করা।

লেখক: চিকিৎসক, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা

বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন : পবিত্র কোরআন ছুঁয়ে স্বীকারোক্তি দিলেন যুবদল নেতা

Gaza 1

গত শুক্রবার রাতে কমলাপুর স্টেশনে প্রবেশের সময় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি কামরায় আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে।

আগুনের এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু ও বেশ কয়েকজন যাত্রীর দগ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদেরকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুনের ঘটনায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবীসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, দুই ধাপে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিলেন যুবদলের নেতাকর্মীরা। স্বীকারোক্তিতে এমনটাই বলেন গ্রেফতারকৃত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের এক সদস্য মোহাম্মদ মনসুর আলম।

গ্রেফতারকৃত যুবদলের ওই সদস্য বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় পবিত্র কোরআন ছুঁয়ে শপথ করে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন ।

স্বীকারোক্তিতে যুবদলের সদস্য মোহাম্মদ মনসুর আলম বলেন, “ট্রেনের ব্যাপার নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক সদস্য সচিবসহ আমরা টিম লিডাররা ভার্চুয়ালি মিটিং করেছিলাম।মিটিংয়ে, নির্বাচনী ক্যাম্পগুলো আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা নেয়া হয় যাতে ভোটাররা ভীত হয়ে কেন্দ্রে না আসেন।পাশাপাশি, ঢাকায় প্রবেশের পথে যেকোনো জায়গায় আপ অ্যান্ড ডাউন ট্রেনে হামলা চালানোর বিষয়ে কথা বলা হয়েছে।”

গ্রেফতারকৃত যুবদলের ওই সদস্য আরো বলেন, “আমার একটা ছোট বাচ্চা আছে এবং কোরআন ছুঁয়ে শপথ করে বলছি, আমি মোটেও মিথ্যা বলছি না। আমি কাউকে ফাঁসাচ্ছি না, কোনো মিথ্যাও বলছি না।”

রাজধানী ঢাকার গোলাপবাগে ট্রেনে আগুন দেয়া ও মানুষ পোড়ানোর এ ঘটনা সমগ্র বিশ্বের বিবেককে হতবাক করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, “এটি গণতন্ত্রের অপমান, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর আক্রমণ এবং নাগরিক অধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন।’ প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনা হবে এবং অপরাধীকে দেশের আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
পরিকল্পিত এই নিন্দনীয় ঘটনা নিঃসন্দেহে আমাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের কেন্দ্রে আঘাত করেছে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের ঠিক দুদিন আগে এই ঘটনাটি দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উৎসব, সুরক্ষা ও নিরাপত্তাকে বাধাগ্রস্ত করার চূড়ান্ত অভিপ্রায়।”

 

সুত্রঃ jagonewsbd24.com

নির্বাচনের দিন সারাদেশে হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

Gaza 27

সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে নির্বাচনের দিন সারাদেশে হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।

আগামী শনিবার  ৬ জানুয়ারি সকাল ৬টা থেকে সোমবার ৮ জানুয়ারি সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আজ বিকেলে এক জরুরি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

আগামী রবিবার ৭ জানুয়ারি সারাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তবে এই নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। এ অবস্থায় ভোটের আগের দিন, ভোটের দিন ও ভোটের পরদিন সকাল পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি পালন করবে তারা।

গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপি দলের মহাসমাবেশে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে হওয়ার পর থেকে চার দফায় পাঁচদিন হরতাল কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। এছাড়াও তারা ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ১২ দফায় মোট ২৩ দিন দেশব্যাপী সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে।এছাড়াও, ২৬ ডিসেম্বর থেকে দফায় দফায় ঢাকাসহ সারাদেশে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি দিয়ে আসছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।

নির্বাচন নিয়ে আস্থাহীনতায় আছে দেশের মানুষ: জিএম কাদের

GM kader

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও রংপুর-৩ আসনের প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, দেশের মানুষ নির্বাচন নিয়ে আস্থাহীনতায় আছে। আওয়ামী লীগ অন্যায়ভাবে সব দখল করে নেবে কি না- এ নিয়ে ভোটাররা এখনো শঙ্কায়।

রংপুরে ভোটের পরিবেশ সম্পর্কে জিএম কাদের বলেন, এখানো ভোটের পরিবেশ ভালো আছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি হয়, সেটা দেখার পালা, তবে ভোটাররা কেন্দ্রে আসবেন কি না বা ভোট দিতে পারবেন কি না আর ভোট দিলেও সঠিকভাবে গণনা ও ফলাফল সুষ্ঠু হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে চলমান সংকট ঘনীভূত হবে। দেশে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর নগরের সেনপাড়ার স্কাই ভিউ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ শঙ্কা প্রকাশ করেন।

সব উপেক্ষা করে জাপার প্রার্থীরা মাঠে সরব আছে এবং থাকবে। এছাড়া সব জায়গায় ফ্ল্যাগ তুলে রাখতে এবার অধিকাংশ আসনে প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি। ১৯৯০ এর পর ৩০০ আসনে ফাইট করার যোগ্যতা পার্টির ছিল না, এখনো নেই। এবাবের নির্বাচনে ৪০/৫০ জন প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় বড় ফ্যাক্টর হবে না।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দলের যারা নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছেন, ভোটের পরে ভেরিফাই করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনের জাপার প্রার্থী মোস্তফা সেলিম, জেলা জাপার সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসীর, পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আলাউদ্দিন মিয়া, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক শাফিউর রহমান শাফি, রংপুর মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, সহ-সভাপতি জাহেদুল ইসলাম, জেলা জাতীয় মহিলা পার্টির সম্পাদিকা নাহিদ ইয়াসমিন ও সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মাসুদ মাসুদ নবী মুন্না, জাতীয় যুব সংহতি রংপুর জেলা সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিম।

দ্বাদশ সাসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ (সদর উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশনের ৯ থেকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড) আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান দলীয় প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে লড়ছেন। এছাড়া বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আব্দুর রহমান রেজু ( প্রতীক: একতারা), বাংলাদেশ কংগ্রেসের একরামুল হক ( প্রতীক: ডাব), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সহিদুল ইসলাম (প্রতীক: মশাল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শফিউল আলম  (প্রতীক: আম) এবং তৃতীয় লিঙ্গের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানী (প্রতীক: ঈগল) ভোটের মাঠে লড়ছেন।

নির্বাচন যাতে না হয়, সে চক্রান্ত এখনো আছে বলে জানিয়েছেন: শেখ হাসিনা

somoyersurute.hasina

ঢাকা: নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে এ কে এম শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে জনসভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা জানান। নির্বাচন যাতে না হয়, সে চক্রান্ত এখনো আছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি সবাইকে ভোট দিয়ে দেশে গণতন্ত্র আছে, তা প্রমাণ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘কেউ দাবায় রাখতে পারবা না’। তো বাংলাদেশকে কেউ দাবায় রাখতে পারবে না।নির্বাচন ঘিরে অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র হয়েছিল। নির্বাচন যাতে না হয়, সেই চক্রান্ত এখনো আছে।

যেহেতু নিজেরা নির্বাচন করে জিততে পারবে না, কাজেই দেশের মানুষকে বঞ্চিত করতে চায় ভোটের অধিকার থেকে।

তিনি বলেন, মিলিটারি ডিক্টেটররা যখন একে একে ক্ষমতায় এসেছে, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এখন আবার তারা একই কাজ করতে চায়। আমরা বলেছি নির্বাচন হবে।

আজ ৪ তারিখ।৭ তারিখের নির্বাচনে আমি আপনাদের অনুরোধ করব, সবাই শান্তিপূর্ণ থাকবেন। আমি দেশের সবার কাছে অনুরোধ করব, সবাই শান্তিপূর্ণভাবে থাকবেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা আওয়ামী লীগই জনগণকে নিয়ে জনগণের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। এই টের অধিকার সাংবিধানিক অধিকার, সে অধিকার আমরা সংরক্ষিত করেছি। সবাই ভোটকেন্দ্রে যাবেন, ভোট দিয়ে প্রমাণ করবেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিদ্যমান। ২০০৯ থেকে ২০২৩, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। আজ আমরা ২০২৪ সালে পা দিয়েছি। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলে বাংলাদেশের এত উন্নতি হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, এখন মানুষ সেবা পাচ্ছে, বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আর বিএনপি সেখানে কী করে, আপনারা দেখেছেন। ২৮ অক্টোবর তারা কী ভয়ংকরভাবে পুলিশের ওপর আক্রমণ করেছে। পুলিশকে ফেলে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে, পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে অ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়ে দিয়েছে, রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স যাচ্ছে, সে অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ করেছে এবং সেখানে অনেক পুলিশ সদস্যকে আহত করেছে। ঠিক ২০১৩ সালে যেভাবে হত্যা করেছিল, ঠিক একইভাবে আবারো করেছে।

তিনি বলেন, ঠিক প্যালেস্টাইনে (ফিলিস্তিন) ইসরায়েল যেভাবে হামলা করছে, হাসপাতালের ওপর বম্বিং (বোমাবর্ষণ) করছে, ঠিক বিএনপিও সেই ইসরায়েলকে অনুসরণ করে আজ পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ, অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ করছে। ওদের মনুষ্যত্ব বলে কিছু নেই। আজকে নির্বাচনে তারা আসেনি, সেটি তাদের ইচ্ছা। কিন্তু মানুষের ভোটের অধিকারে বাধা দেওয়া কখনোই দেশের জনগণ মেনে নেবে না। এ অধিকার মানুষের অধিকার। সুতরাং ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ইনশাআল্লাহ হবে।

এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দলকে বিজয়ী করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের মার্কা নৌকা মার্কা, এ নৌকায় ভোট দিয়ে দেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে, এ  নৌকা আজ উন্নয়ন দিয়েছে, এই নৌকা-ই আগামী উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। তাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের প্রার্থীদের আপনারা জয়যুক্ত করবেন। আপনাদের কাছে সে আহ্বান জানাই।

 

খাদ্যের বাড়তি দাম নিয়ে বাংলাদেশের ৭১ শতাংশ পরিবারের উদ্বেগ

sorupinfo price compare

খাদ্যের বাড়তে থাকা দাম বাংলাদেশের ৭১ শতাংশ পরিবারের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশে এক বছর ধরেই খাদ্যে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমান।

‘খাদ্যনিরাপত্তা’ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক নিয়মিত এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এবারের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয় গত ডিসেম্বর মাসে।

খাদ্যের বাড়তি দাম নিয়ে বাংলাদেশের ৭১ শতাংশ পরিবারের উদ্বেগ

বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদনে খাদ্যের মূল্যস্ফীতির হারের ভিত্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে চারটি শ্রেণিতে রেখেছে। বাংলাদেশকে রাখা হয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খাদ্যের মূল্যস্ফীতি শ্রেণিতে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ হিসাবে (অক্টোবর–নভেম্বর) প্রতিবেশী দেশ ভারত, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, ভুটান ও নেপালে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের চেয়ে বেশ কম ছিল। অনেক বেশি ছিল পাকিস্তানে।

সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী, দেশে এখন মোট পরিবার বা খানার সংখ্যা ৪ কোটি ১০ লাখ। বিশ্বব্যাংকের তথ্য বিবেচনায় নিয়ে হিসাব করে দেখা যায়, প্রায় ২ কোটি ৯১ লাখ পরিবারের জন্য খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের বিষয়।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘খাদ্যের মূল্যস্ফীতির হার বেশি বেড়ে গেলে দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী গরিব হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে যায়। গত বছর শুরুর দিকে আমরা একটি গবেষণা করেছিলাম; তখন দেখেছি, দেশের নিম্ন আয়ের ৭০ শতাংশ পরিবার খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভোগে।’

বিশ্বব্যাংক আরও বলছে, ২০২২ সালের চেয়ে ২০২৩ সালে খাদ্যশস্য আমদানি (আমদানি বিল পরিশোধ বিবেচনায়) ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। শস্য নয়, এমন খাদ্যপণ্য আমদানি কমেছে ২০ শতাংশ।

প্রতিবেদনে যা যা আছে

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ২০২২-২৩ অর্থবছরে খাদ্যশস্য উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কিছুটা পিছিয়ে আছে। সরকার আপৎকালীন মজুত করছে। ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর দেশে আপৎকালীন খাদ্যশস্য (চাল ও গম) মজুতের পরিমাণ ছিল সাড়ে ১৮ লাখ টন, যা গত জুনে ছিল ১৭ লাখ ৬০ হাজার টন। সরকার লক্ষ্যের চেয়ে ১১ শতাংশ বেশি চাল সংগ্রহ করেছে।

বিশ্বব্যাংক আরও বলছে, ২০২২ সালের চেয়ে ২০২৩ সালে খাদ্যশস্য আমদানি (আমদানি বিল পরিশোধ বিবেচনায়) ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। শস্য নয়, এমন খাদ্যপণ্য আমদানি কমেছে ২০ শতাংশ।

চালের দাম এক বছর ধরে প্রায় স্থিতিশীল আছে বলে উল্লেখ করা হয় বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে। আরও জানানো হয় যে গত এপ্রিল মাস থেকে সরু চালের দাম কমেছে।

বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল থাকলেও সেটি রয়েছে উচ্চমূল্যে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে বাজারে মোটা চালের প্রতি কেজির দর ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে। মোটা চালের দাম এরপর থেকে বাড়তে বাড়তে ৫০ টাকার আশপাশে ওঠে। সেটা আর তেমন কমেনি। এখন মোটা চালের দাম প্রতি কেজি ৪৮ থেকে ৫০ টাকা।

টিসিবির তথ্যে আরও দেখা যায়, ওই সময় বাজারে খোলা আটার প্রতি কেজির দর ছিল ২৮ থেকে ৩০ টাকা, যা এখন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। একইভাবে অনেকটাই বেড়েছে ভোজ্যতেল, চিনি, ডালসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। যেমন মোটা দানার মসুর ডালের দাম ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। এখন ১০৫ থেকে ১১০ টাকা।

মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা শুরু হয়েছিল করোনাকালের শুরুতে, ২০২০ সালের মার্চ থেকে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর বিশ্ববাজারে খাদ্যসহ বেশির ভাগ পণ্য ও জ্বালানির দাম বাড়ে। বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমতে থাকে। ফলে বাড়তে থাকে মার্কিন ডলারের দাম, যা পণ্য আমদানির খরচ বাড়িয়ে দেয়।

টিসিবির তথ্যে আরও দেখা যায়, ওই সময় বাজারে খোলা আটার প্রতি কেজির দর ছিল ২৮ থেকে ৩০ টাকা, যা এখন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। একইভাবে অনেকটাই বেড়েছে ভোজ্যতেল, চিনি, ডালসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। যেমন মোটা দানার মসুর ডালের দাম ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। এখন ১০৫ থেকে ১১০ টাকা।

২০২২ ও ২০২৩ সালের বেশির ভাগ সময় মাছ, মাংস, সবজি এবং নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম বাড়তি ছিল। সরকারও জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের দাম বাড়িয়েছে।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দেশে খাদ্যের মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধির পেছনে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের একটা প্রভাব ছিল। এখন সেটি কমে এলেও ডলারের দাম কমছে না। ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আমদানি করা পণ্যের দাম খুব বেশি কমবে বলে মনে হয় না।

কেন ‘লাল’ শ্রেণিতে বাংলাদেশ

খাদ্যের মূল্যস্ফীতি কোন দেশে কতটা বেশি, তা বোঝাতে বিভিন্ন দেশকে চার শ্রেণিতে ভাগ করেছে বিশ্বব্যাংক। যেসব দেশের খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ৩০ শতাংশ বা এর বেশি, সেসব দেশকে ‘বেগুনি’; ৫-৩০ শতাংশের মধ্যে হলে ‘লাল’; ২-৫ শতাংশের মধ্যে হলে ‘হলুদ’ এবং ২ শতাংশের কম খাদ্যের মূল্যস্ফীতির দেশগুলোকে ‘সবুজ’ শ্রেণিতে রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ ২০২৩ সালজুড়েই (নভেম্বর পর্যন্ত হিসাব) ‘লাল’ শ্রেণিতে ছিল। এ শ্রেণিতে বাংলাদেশের সঙ্গী ৭১টি দেশ, যার মধ্যে রয়েছে উগান্ডা, লাওস, মিশর, হন্ডুরাস, কেনিয়া, ইরান, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, দক্ষিণ আফ্রিকা, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য।

বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোতে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি অনেকটাই কমেছে। উদাহরণ শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে গত বছর সাড়ে ৫৮ শতাংশ পর্যন্ত খাদ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছিল। তবে গত জুলাই থেকে মূল্যস্ফীতির হার বাড়েনি; বরং মূল্য সংকুচিত হচ্ছে। অর্থাৎ, গত বছর যে দাম ছিল, তার চেয়ে কমেছে। নভেম্বরে শ্রীলঙ্কায় খাদ্যমূল্য সংকুচিত হয়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। অর্থাৎ আগের বছর খাদ্য কিনতে ১০০ রুপি ব্যয় হলে, এবার লাগছে ৯৬ দশমিক ৪০ রুপি।

ধনী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রও খাদ্যের মূল্যস্ফীতি অনেকটা কমিয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তাদের খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ শতাংশের বেশি, যা গত নভেম্বরে ৩ শতাংশের নিচে নামে।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দেখা যায়, খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ধারাবাহিকভাবে বেড়ে নভেম্বরে সাড়ে ১২ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, যা ছিল এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। শুধু খাদ্যের মূল্যস্ফীতি নয়; সার্বিক মূল্যস্ফীতির হারও বেড়েছে। গত মার্চ মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ৯ শতাংশের বেশি ছিল।

সরকার নিম্ন আয়ের এক কোটি পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ডের ভর্তুকি মূল্যে ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল ও পেঁয়াজ দেয়। এটা দেওয়া হয় মাসে একবার, পরিমাণ এক থেকে দুই কেজি করে। খোলাবাজারে কম দামে চাল ও আটা বিক্রি করা হয়। তবে অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, কম দামে খাদ্যপণ্য বিক্রির আওতা বাড়ানো দরকার। কারণ, স্বল্প আয় ও নিম্নমধ্যবিত্ত অনেক পরিবার এ সুবিধার বাইরে রয়েছে।

রাজধানীর একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপক পদে চাকরি করেন মিরপুরের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী। দুই ছেলে, স্ত্রীসহ চারজনের সংসার তাঁর। বছর দুয়েক আগেও স্বাচ্ছন্দে৵র সঙ্গেই সংসার চালাতেন তিনি। কিছু সঞ্চয়ও করতে পারতেন। তিনি বলেন, এক-দেড় বছর ধরে সঞ্চয় করতে পারেন না; বরং খাবারের ব্যয়ে কাটছাঁট করতে হয়েছে।

মোহাম্মদ আলী আরও বলেন, সংসারের ব্যয় ৩০ শতাংশের মতো বেড়েছে; কিন্তু আয় তো সেভাবে বাড়েনি।

শীতকালে কলা খেলে যা হয়

শীতকালে কলা খেলে যা হয়

আমরা অনেকেই শীতে কলা খাই না। অনেকে মনে করেন কলা খেলে ঠান্ডা লাগার আশঙ্কা বাড়ে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন শীতের খাবারে কলা রাখুন। এতে নানা রকম উপকার পাবেন। শীতে কলা খাওয়ার একাধিক উপকার রয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আপনি যদি শক্তিশালী পেশী চান, নিয়ন্ত্রিত ওজন আর নিয়ন্ত্রিত ব্লাড প্রেসার চান তাহলে প্রতিদিন কলা খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। এছাড়া আপনার শিশুকে নিয়মিত কলা খেতে দিন। কলা হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার কলা

কলার হচ্ছে ভিটামিন সি, রাইবোফ্ল্যাভিন, ফোলেট, নিয়াসিন, কপার, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ ফল। এতে আছে একাধিক জরুরি খনিজ এবং ভিটামিন। কলা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের অনেক বড় উৎস। এই উপাদানগুলো একাধিক ক্রনিক রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে। অ্যাসিডিটির সমস্যা কমায় কলা: শীত কালে অনেকেই গ্যাস বা অ্যাসিডিটির মতো পেটের সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু এই সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় খুঁজে পান না। বলছি তাদের জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ কলা হচ্ছে একটি আদর্শ খাবার।

ওজন কমাতে কলার ভূমিকা

বিশেষজ্ঞদের মতে, ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকলে একাধিক জটিল অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই ওজন কমাতে চাইলে নিয়মিত কলা খান। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা কিনা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। আর অনেকক্ষণ পেট ভরে থাকলে খাওয়ার ইচ্ছে চলে যায়। কম খেলে অচিরেই ওজনের কাঁটা উল্টোদিকে ঘুরে যাবে।

হার্ট ভালো রাখতে কলা ফলের ভূমিকা

অনেকে কম বয়সেই হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেলিওর, অ্যারিদমিয়ার মতো অসুখে আক্রান্ত হন। তাই আট থেকে আশি, সবাইকেই হার্টের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই কাজে আপনার সহযোগী হতে পারে কলা। কলায় থাকা পটাশিয়াম হাই ব্লাড প্রেশারকে নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে।

কিডনি ভালো রাখতে কলা খান

মানব দেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হলো কিডনি। সাঠিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত না হলে কিডনি নষ্ট হতে পারে। আবার যেকোন ক্রনিক রোগ কিডনি ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। তবে ভালো খবর হলো, নিয়মিত পটাশিয়াম সমৃদ্ধ কলা খেলে কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। যেহেতু কলা একটি বারোমাসি ফল তাই শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা কোনো সমস্যা নেই, বরং বছরের ৩৬৫ দিন কলা খেতেই পারেন।

২০২৩ জুড়ে ডেঙ্গুর দখলে ছিল দেশ

images 1 1

সন্তানের মুখ দেখতে মুখিয়ে ছিলেন শাহ আলম।  পড়ালেখার ইতি টেনে কয়েক বছর আগে ঢাকায় একটি ওষুধ কোম্পানির চাকরিতে যোগ দেওয়া শাহ আলমের সে সুযোগ হয়নি। মাত্র ২৫ বছর বয়সেই ঝরে যায় তাঁর প্রাণ। গত আগস্টে যখন তিনি হাসপাতালে হাসপাতালে মারা যান, তখন তাঁর স্ত্রী ছিলেন ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে ওই মাসের ২০ তারিখেই তিনি চলে যান না ফেরার দেশে। চলতি বছর এমন অগণিত হৃদয় বিদারক ঘটনার সাক্ষী। আর এই সব ঘটনাই এক সূত্রে বাঁধা—ডেঙ্গু।

 

শীতের শুরুতে এসেও এই ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে দেশ বের হতে পারেনি। এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ আগের সব রেকর্ড ওলট–পালট করে দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইইডিসিআরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি মানুষ এবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়, মৃত্যুর রেকর্ডও ছিল অনেক বেশি। এখনো হাসপাতালগুলোতে অনেক ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের ২৩ ডিসেম্বর ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ২০ হাজার ২৭২ জন। ঠিক এক বছর আগে ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬১ হাজার ৮৮৩ জন। এবারের মৃত্যু গত কয়েক বছরের সংক্রমণ ও মৃত্যুকে হার মানায়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন। ২০২০ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল। ২০২১ সালে ডেঙ্গুর শনাক্ত বেড়ে দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ২০২২ সালে শনাক্ত আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৬২ হাজার ৩৮২ জনে।

আইইডিসিআরের তথ্য অনুয়ায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয় ১৬৪ জন, ২০২০ সালে ৭ জন, ২০২১ সালে ১০৫ জন, ২০২২ সালে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়। চলতি বছর মৃত্যুর সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

ডেঙ্গুর ভয়াবহতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই ১১ হাজারের বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এক পর্যায়ে এমনকি ডেঙ্গু থেকে সন্তানদের রক্ষায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবিও তুলেছিলেন অভিভাবকেরা।

একটি উদাহরণ দিলেই বোঝা যাবে আতঙ্কের বিষয়টি। গত আগস্টে চট্টগ্রামের বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ১০৭ শিক্ষার্থী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। এতে সে সময়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এই ঘটনায় অনেক অভিভাবক সন্তানদের জীবন রক্ষার্থে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি করেন।  শেষ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও সতর্কতামূলক পাঁচটি নির্দেশনা জারি করা হয়।

পরিস্থিতি এমন হয় যে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জুলাই মাসে জানানো হয়, মুগদা হাসপাতালে আর ডেঙ্গু রোগী নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ সে সময় মুগদায় এক বেডে ২ জন করে রোগী ছিলেন।

অবশ্য ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারি উদ্যোগের কমতি ছিল না। অন্তত প্রায় দিন ঢাকা শহরের অলিতে গলিতে দেখা গেছে মশা মারার ওষুধ হাতে কাউকে না কাউকে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। শেষে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিধনে ব্যাকটেরিয়া প্রয়োগ করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সিঙ্গাপুর থেকে নিয়ে আসা হয় এ ওষুধ। এর আগে এডিস নিধনে জলাশয়ে নোভালরুন ট্যাবলেট, ড্রেনে গাপ্পি মাছ, জলাশয়ে হাঁস ও ডোবায় ব্যাঙ ছাড়ে সিটি করপোরেশন। আবার ড্রোন দিয়ে মশার প্রজননস্থান চিহ্নিত করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এর পাশাপাশি দেশের সব সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্নার চালু করা হয়। একই সঙ্গে মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড ওয়ার্ড চালু করা হয়। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সব সরকারি হাসপাতালে ১০০ টাকার পরিবর্তে ৫০ টাকায় ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থাও করা হয়।

কিন্তু দুঃখের বিষয় এতে মশার উৎপাত কমেনি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ২০ হাজার ২৭২। এর মধ্যে ঢাকা সিটির আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৯ হাজার ৭৭৬ জন, ঢাকা সিটির বাইরে ২ লাখ ১০ হাজার ৪৯৬ জন। ২০২৩ সালের (২৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৬৯৩ জন।

সকালের নাস্তায় ডিম রাখলে লাভ ঠিক কতটা

images 6

ঢাকা থেকে ট্রেনে চট্টগ্রাম যাচ্ছেন লুৎফর সাহেব। সেই ট্রেন একের পর এক স্টেশনে থামছে। ট্রেন থামতেই লুৎফর সাহেব শুনতে পান ‘এই ডিম ডিম ডিম, সেদ্ধ ডিম, মুরগির ডিম, হাঁসের ডিম। ট্রেনে বসে ফেরিওয়ালার এই ডাক শুনতে পাননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। শুধু কি ট্রেনের স্টেশন? এই ডাক শোনা যায়, বাস স্টেশন, লঞ্চঘাট, খেলার স্টেডিয়াম, হাট-বাজার আর রাস্তার পাশে। অফিস থেকে বাসায় ফিরতি পথেও অনেকে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে পুষ্টির জোগানদাতা সেদ্ধ ডিম খান। পুষ্টির অনেক বড় উত্স ডিম। আসুন জেনে নিন, ডিমের কিছু গুণের কথা-

. পুষ্টিগুণে ভরপুর ডিমে আছে ভিটামিন এ, বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন ই এবং কে। ডিমের কুসুমে থাকে কোলিন। কোলিন মস্তিষ্কের বিকাশ এবং কার্যক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

. ডিম শরীরে দীর্ঘসময় শক্তি সঞ্চয় করতে সাহায্য করে এবং ক্ষুধা কমায়। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে ডিম খেতে পারেন। সকালের নাশতায় ডিম রাখুন। কারণ এই একটি ডিম সারা দিনের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করবে।

. ডিমে ফলেট থাকে। ফলেট শরীরে নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে। গর্ভবতী মায়েদের জন্য ফলেট অনেক বেশি প্রয়োজন। ফলেট শিশুর জন্মগত ত্রুটি দূর করতে সহায়তা করে।

৪. ডিমকে মূলত আদর্শ প্রোটিন বলা হয়। কারণ, এতে আছে প্রয়োজনীয় উপাদান। শরীর গঠনে প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া প্রোটিন বিভিন্ন অঙ্গ, ত্বক, চুল এবং শরীরের বিভিন্ন টিস্যু পুনর্গঠনে সহায়তা করে।

. ডিমের কুসুম ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-বি-এর খুবই ভালো উত্স। ভিটামিন-এ ত্বকের জন্য ভালো। ভিটামিন-বি শরীরে শক্তি যোগায়। এ ছাড়া ডিম চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।

. ভিটামিন ডির একটি ভালো খাদ্য উৎস হচ্ছে ডিম। ভিটামিন ডি হাড় এবং দাঁত সুস্থ ও মজবুত করে। এ ছাড়া ডিম কিছু কিছু ক্যানসারের কোষ প্রতিরোধে এবং  শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।